মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮

ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা ড. মোহাম্মদ আমীনের বই / প্রমিতা দাশ লাবণী


এই গ্রন্থের ‘ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা’ শিরোনামের গল্পটি আমার পড়া শ্রেষ্ঠ গল্প। এটি ফেসবুকে প্রকাশিত হওয়ার
পর পাঠকমহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফেসবুক ভাইরাল হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আলোচনায় আলোচনায় সরব হয়ে ওঠে পাঠক। ‘অর্থনীতির অধ্যাপক সেলসম্যান এবং বউ’ শিরোনামের গল্পটি ফেসবুকে প্রকাশিত হলে বোদ্ধামহল যেন গল্পের নতুন আস্বাদন পায়। গল্প দুটি পড়ে এতই মুগ্ধ হয়ে পড়ি যে, লেখকের সঙ্গে মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করি। লেখককে অনুরোধ করি, পা-ুলিপিটি পড়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য। তিনি আমার অনুরোধ রাখলেন। ই-মেইলে গ্রন্থটির পা-ুলিপি পাঠিয়ে দিলেন। আমি পা-ুলিপি পড়ার সুযোগ পেলাম। বইয়ের গল্পগুলি পড়ে আমার মনে গল্প সম্বন্ধে পূর্বে যে ধারণা ছিল, তা পাল্টে গিয়ে নতুন একটা ধারণা সৃষ্টি করল। গল্প শুধু গল্প নয়Ñ জীবন, জীবনটাই গল্প। আর একটা জিনিস উপলব্ধি করতে পারলাম সেটি হলো - লিখতে জানলে যে কোনো সাধারণ বিষয়ও অসাধারণ হয়ে উঠে। যেমন পরিবেশনার গুণে সাধারণ খাবার হয়ে ওঠে তৃপ্তির চূড়ান্ত প্রপান।

গল্প বাছাইয়ে লেখকের বিচক্ষণতায় মুগ্ধ না হয়ে পারিনি। জীবনের প্রতিটি দিক, প্রতিটি ক্ষণ এবং প্রতিটি বিষয় উঠে এসেছে গল্পসমূহে। জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখলেও এমন লেখা যায় না, অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নিরীক্ষণ করতে হয়
অনুভবের বাস্তবতায়। স্বপ্নকে টেনে নামাতে হয় জীবেনর কানায়। লেখক এখানে তা-ই করেছেন এবং ভালোভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গল্পসমূহের ভাষা এত সহজ  এবং শব্দচয়ন এত মনোরম ও প্রেমময় যে, গল্পকে যেন মনের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য লেখা হয়েছে। তাঁর ভাষা স্বভাবতই মুগ্ধকর কিন্তু গল্পগুলিতে মুগ্ধতা হৃদয়ের আবেগে তাড়িত হয়ে একাকার হয়ে গেছে ভালোবাসার ভালোবাসায়। অল্পকথায় অনেক বেশি প্রকাশের ক্ষমতা কত আকর্ষণীয় তা গল্পগুলি পড়লে বোঝা যায়। 

ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা গল্পগ্রন্থে বিশটি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্প ভিন্ন স্বাদ নিয়ে পাঠকের মনে ভিন্ন আমেজের জোয়ার আনতে সক্ষম। কিশোর হতে সব বয়সের পাঠকের উপযোগী গল্পগ্রন্থটি পড়া শুরু করলে, শেষ না করে উঠে যাওয়া কষ্টকর। অসাধারণ এই গল্পগুলি প্রাত্যহিক জীবনের নানা ভালোমন্দ দিককে হৃদয়গ্রাহী ঘটনার মধ্য দিয়ে ঝরঝর নিপাটে তুলে ধরা হয়েছে। আধুনিক সাহিত্যের এই শ্রেষ্ঠ গল্পগ্রন্থটি হবে আপনার সংগ্রহের নিষিক্ত বন্ধু। বইটি হতে পারে যে কোনো দিবসে যে কোনো অনুষ্ঠানে যে কোনো বয়সের এবং যে কোনো সম্পর্কের প্রিয়জনকে দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার। 

প্রমিতা দাশ লাবণী
অক্সফোর্ড, ইংল্যান্ড।

ড. মোহাম্মদ আমীনের বই ও অমর একুশে গ্রন্থমেলা / চয়নিকা জাহান চৌধুরী

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নতুন প্রকাশিত ড. মোহাম্মদ আমীনের
কয়েকটি বইয়ের নাম প্রাপ্তিস্থান-সহ  উল্লেখ করা হল :

১. অর্হণা, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
২. তিনে দুয়ে দশ, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৩. ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৪. বাঙালির বাংলা হাসি, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৫. বিচিন্ত কথন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৬. বড়ো হুজুর ও বরুমতির মেলা, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৭. চর্যাপদের পীঠস্থান, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৮. বাংলা আমার ভালো নেই, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
৯. গুরমিত রাম রহিম সিং ও ভারতীয় ধর্মগুরুদের কীর্তিকলাপ, পুথিনিলয়।
১০. বাংলাদেশের জেলা উপজেলা ও নদনদীর নামকরণের ইতিহাস, শোভা প্রকাশ, বাংলাবাজার।
১১. ওরা এগার জন, শোভা প্রকাশনী, বাংলাবাজার, ঢাকা।
১২. জর্জ ওয়াশিংটন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, শোভা প্রকাশনী, বাংলাবাজার।
১৩. নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক (১৯০১২০১৭), শিখা প্রকাশনী, বাংলাবাজার।
১৪. প্রবাদ ও প্রবচন অভিধান, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
১৫. সময়ের শ্রেষ্ঠ মনীষী, হাওলাদার প্রকাশনী, বাংলাবাজার, ঢাকা।
১৬. সহজসূত্রে প্রমিত বাংলা বানান, মাওলা ব্রাদার্স, বাংলাবাজার, ঢাকা।
১৭. যেখানেই থাক ভালো থেক গোপাল, মাওলা ব্রাদার্স, বাংলাবাজার, ঢাকা।
প্রাপ্তিস্থান :
(১) স্টল নম্বর ২০০,২০১,২০২ (পুথিনিলয়)
(২) প্যাভিলিয়ন নম্বর ১৮ (শোভা প্রকাশ)।
(৩) স্টল নম্বর ১৬৯, ১৭০, ১৭১ ও ১৭২ (শিখা প্রকাশনী)।
(৪) প্যাভিলিয়ন নম্বর ১১ (মাওলা ব্রাদার্স)।
(৫) সংশ্লিষ্ট প্রকাশনী, বাংলাবাজার, ঢাকা।
(৬) রকমারি ডট কম এবং অভিজাত লাইব্রেরি।

শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৮

বিচিন্ত কথন / চয়নিকা জাহান চৌধুরী

বিচিন্ত কথন ড. মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। প্রবন্ধ নাম শুনলে মনে হয়, কঠিন কিছু।
কিন্তু এই প্রবন্ধ গ্রন্থটি পড়লে বোঝা যায়, প্রবন্ধও সহজ ও সুখপাঠ্য হয় উপন্যাসের মতো।পুস্তক, চিন্তার লালিত্য পোষণ হতে উৎসরিত আদর্শিক স্পন্দনের লিখিত রূপ। যা পাঠকদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়। প্রত্যেক মানুষের মনে স্বকীয় চিন্তা-চেতনার নিবাস থাকে। তবে তা প্রকাশিত না হলে আলোচনার বাইরে থেকে যায়। ফলে এরূপ অপ্রকাশিত চিন্তনের কার্যকারিতা নিষ্প্রভ থেকে যায়। ব্যক্তির মতো কিংবা ব্যক্তির আদর্শ ও অনুভাবনার মতো ব্যক্তিভেদে চিন্তার রূপাবয়বও ভিন্ন হয়। শুধু তাই নয প্রকাশ ভঙ্গিতেও দেখা যায় নানা বৈচিত্র্য। লেখালেখি একটি জটিল শিল্পকর্ম। জটিল শিল্পকর্ম হিসেবে লেখার বৈচিত্র্য-নিপুণতা সবচেয়ে সর্বজনীন আবার সবচেয়ে বিতর্কমুখর। কারো সঙ্গে কারো চিন্তা ও মননের মিল ঘটে যাওয়া যেমন অস্বাভাকি কিছু নয় তেমনি অস্বাভাবিক নয় অমিল হওয়া। বরং অমিল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থেকে যায়। আলোচ্য গ্রন্থে এই অমিলকে মেনে নিয়ে নিজস্ব চিন্তনকে প্রকাশ করা হয়েছে। এখানে কাউকে আহত করার বা কারও চিন্তাকে অবহেলা করার কোনো ইচ্ছা মোটেও প্রদর্শিত হয়নি। যদি এমন কিছু থেকে থাকে তবে সবিনয়ে ক্ষমাপ্রার্থী।

 লেখক বলেছেন, এই গ্রন্থে প্রকাশিত বক্তব্যসমূহ আমার নিজস্ব চিন্তার পরিস্ফুটন মাত্র। এখানে যে চিন্তন লৈখিকরূপে প্রকাশিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ নিজস্ব ধারণার মনাঙ্গিক বিচার-বিশ্লেষণ এবং অভিজ্ঞতাজাত উপলব্ধিমাত্র। এক জনের চিন্তার সঙ্গে সবাই একমত হবেন, এমনটি আশা করা যায়  না। তবে বক্তব্যসমূহের ঐক্যানৈক্যের মাধ্যমে পাঠকের মনে যে অনুভূতিই সৃষ্টি হোক না কেন এবং পুস্তকে বিধৃত বক্তব্যের পক্ষে বা বিপক্ষে যেই সমালোচনা হোক না কেন, ওটাই হবে আমার লেখার সার্থকতা। ঐকমত্য প্রকাশ যেমন চিন্তার স্ফূরণ তেমনি ভিন্নমত পোষণ করাও চিন্তার স্ফূরণ। বরং ভিন্নমত পোষণে যে ভিন্ন ধারণার সৃষ্টি করে, তা পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও তর্কে-বিতর্কে আরও জোরালো এবং যুক্তিগ্রাহ্য হয়ে ওঠে।  এ অবস্থায় সবার মত বা অমতের প্রতি তিনি বিমল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

(১) ভালোবাসা, (২) উন্নয়ন ও দুর্নীতি, (৩) জাত অজাত, (৪) দাম্পত্য জীবন, (৫)ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ব, (৬) স্বজনপ্রীতি ও দেশপ্রেম, (৭) অহঙ্কার পতনের মূল কথাটি ভুল,(৮) সত্য জানার কৌশল, (৯) বিবেচক অতিথি, (১০)রূপ ও গুণ, (১১)শেখ সাদী ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কুকুর, (১২) স্বাধীনতা, (১৩)স্বপ্ন ও কল্পনা, (১৪)আস্থা বিশ্বাস ভালোবাসা, (১৫)সুখ শান্তি কষ্ট, (১৬)নিয়ন্ত্রণ, (১৭)ধর্ম বিশ্বাস জ্ঞান, (১৮)ধারণা ও বিশ্বাস, (১৯)মানুষ, (২০)ব্যক্তি ও নাম এবং (২১) বউ বস ও সঙ্গী- এই একুশটি প্রবন্ধ নিয়ে বইটির পরিধি সজ্জিত। আমি বইটির পাণ্ডুলিপি পড়ে বিস্মিত হয়েছি। কারণ লেখক প্রত্যেকটি বিষয়ে এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে তার নিজস্ব। এখানে তিনি কাউকে অনুসরণ করেননি। যদি কারো সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে তা কাকতালীয় এবং মৌলিকত্বের নিদর্শনই হবে।

মানুষ প্রবন্ধ শুরু হয়েছে এভাবে, মানুষ পোশাকাবৃত পশু। মানুষ ছাড়া অন্য কারও কাছে সে তত গুরুত্বপূর্ণ নয়।  বরং মানুষের অনুপস্থিতিটাই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ যত বাড়ে বন্ধুত্ব তত কমে, যেখানে মানুষ কম সেখানে 
ড. মোহাম্মদ আমীন
 বন্ধুত্বের গাঢ়ত্ব তত প্রগাঢ়। এ জন্য যত বড় শহর তত বেশি নির্জনতা। মানুষ যত বাড়ে পণ্যের মতো তার মূল্যও তত কমে। আবার মানুষ যত বাড়ে পণ্যের দামও তত বাড়ে। সুতরাং মানুষ শুধু পশু নয়, এক প্রকার পণ্য; পণ্যের মূল্য।” ধর্ম বিশ্বাস ও জ্ঞান প্রবন্ধের প্রথম অনুচ্ছেদ পড়লে মন নতুন ধারণায় বিকশিত হয়ে উঠে। লেখক বলেছেন, “ধর্ম কী? বিশ্বাসে বাধ্য করার বিধিমালা। বিশ্বাস করতেই হবে, কোনও প্রশ্ন নয়; কোনো সন্দেহ নয়- এটিই ধর্ম। বিশ্বাস ধর্মের ভিত্তি। যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ধর্মও নেই। বিশ্বাস মানে কী? বিশ্বাস ধারণার আদিপর্ব। অন্য কথায় জ্ঞানপূর্ব ধারণা। যেটি কখনও প্রমাণ করা যায় না আবার অপ্রমাণ করাও তত সহজ নয়।  মূলত এটিই বিশ্বাস। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে বিশ্বাসের হেতু? ধর্মে এর বিকল্প নেই। বিশ্বাস না করলে ধর্মমতে অধার্মিক। বিশ্বাস ধর্মের শ্বাস। বিশ্বাস ধর্মকে ব্যক্তির মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। যার মধ্যে বিশ্বাস আছে  সে-ই ধার্মিক। যার মধ্যে প্রাণ আছে সে জীব, যার মধ্যে বিশ্বাস আছে সে ধার্মিক। বিশ্বাস যেহেতু জ্ঞানপূর্ব ধারণা সেহেতু ধার্মিক হতে হলে জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন হয় না।

ভালোবাসা প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, ভালোবাসা উদ্দেশ্য পূরণের নান্দনিক কৌশল। ভালোবাসা নামের  পুষ্পময় 
চয়নিকা জাহান চৌধুরী
প্রত্যয়টি স্বার্থের মমতায় লোমে লোমে এত বেশি নান্দনিক থাকে যে, যে কোনো স্বার্থকে নিঃস্বার্থ মাদকতায় ফেনিল করে দিতে পারে। এই নান্দনিকতাই ভালোবাসা নামক কুশলী বিনয়োগটাকে, সাধারণ বিনিময় থেকে আলাদা করে রাখে। এজন্য ভালোবাসা, পরাজয়কেও মহা-বিজয়ের  চেয়ে বিমল আনন্দে ভরিয়ে দিতে পারে। ভালোবাসা যেখানে যত গভীর, সেখানে নত হওয়া তত গৌরবের। তবে আর্থিক দীনতা গভীর সম্পর্ক পর্যন্ত ভেঙে দেয়। আর্থিক লালিত্যে আত্মিক হৃদ্যতা কঠিন ও সর্বজনীন হয়ে ওঠে। চাওয়া-পাওয়া ভালোবাসার শ্বাসপ্রশ্বাস। প্রাপ্তিযোগ ফুরিয়ে গেলে প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসাও ফুরিয়ে যায়। তাই জীবন্ত ভালোবাসায় কিছু চাওয়া পাওয়া জীবের শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো অনিবার্য।” প্রতিটি প্রবন্ধ এমন সব মৌলিক চিন্তায় সজ্জিত। প্রবন্ধ সাধারণত কঠিন হয়ে থাকে, ভারী কথাগুলি আরো ভারী হয়ে সাধারণ পাঠককে প্রবন্ধবিমুখ করে তোলে। কিন্তু বিচন্ত কথন এমন একটি প্রবন্ধরাশি, যার প্রতিটি প্রবন্ধ গল্পের মতো সুখপাঠ্য। একটানে গল্পের মতো পুরো বই না পড়ে উঠা যায় না। আমিও তাই করেছি। নতুন চিন্তা জাগ্রত এবং মনোভাবকে বিকশিত করার জন্য বইটি যে কারো সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করবে।


পুস্তকটির প্রকাশক পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা। পাওয়া যাবে, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পুথিনিলয় এর স্টলে।

মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৮

ওরা এগারো জন/ প্রমিতা দাস লাবণী

ওরা এগারো জন :::::::
প্রকাশক : শোভা প্রকাশ
প্রাপ্তিস্থান : অমর একুশে গ্রন্থমেলার শোভা প্রকাশ এর প্যাভিলিয়ন।
-----------------------------------------------------------------------
‘ওরা এগারো জন’ ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা একটি ভিন্নধর্মী বই। বিষয়বস্তু নতুন না হলেও, ধারণা নতুন এবং অভিনব। এমন গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের বিকাশে একটি কার্যকর ও স্থায়ী উদ্যোগ বলে মনে হয়েছে। এই গ্রন্থে এমন এগার জনের জীবনচরিত ও কীর্তির বর্ণনা করা হয়েছে, যারা পরিশ্রমী, প্রতিভাবান, চিন্তাশীল, সৃজনমুখর এবং আপন ভাবনারাজ্যে তুলনাহীন। প্রতিভাবান এই এগারো জনের দশজন শুবাচ সদস্য এবং একজন জাপানি (নাওমি ওয়াতানাবে) বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি শুবাচের উপদেষ্টা।
বইটির প্রকাশের বিষয়ে লেখকের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতে, “প্রতিভার যথাযথ মূল্যায়ন না হলে প্রতিভার সৃষ্টি হয় না। পাথরে পড়ে থাকলে অতি উন্নত বীজও নষ্ট হয়ে যায়। উপযুক্ত পরিবেশ না পেলে অতি উত্তম বীজও অনঙ্কুরিত থেকে যায়। অঙ্কুরিত হলেও উর্বর ক্ষেত্র, আবশ্যক উপাদান এবং পরিচর্যাহীনতার কারণে ফুলে-ফলে বিকশিত হওয়ার আগে মরে যায়। তাই কোনো ব্যক্তি শুধু প্রতিভাবান হলে হয় না, বিকাশ বা খ্যাত হওয়ার জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র এবং প্রয়োজনীয় পরিচর্যা আবশ্যক। উপযুক্ত ক্ষেত্র এবং পরিচর্যার অভাবে অত্যাবশক-ক্ষেত্রহীন উত্তম বীজের মতো অনেক প্রতিভাবান হারিয়ে যাচ্ছে। যদি অখ্যাত এই প্রতিভাবানদের তুলে ধরা যায়, তাহলে তারা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্র খুঁজে পাবেন। ‘ওরা এগারো জন’ গ্রন্থের মাধ্যমে এই প্রয়াসের সূচনা করা হলো। তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে, প্রতিবছর এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে।”
‘ওরা এগারো জন’ এমন একটি গ্রন্থ, যেখানে কবি-সাহিত্যিক হিসেবে স্বল্পপরিচিত কিন্তু প্রখর মেধাসম্পন্ন অনবদ্য সৃজনশীল ক্ষমতার অধিকারী এগারো জন ব্যক্তির সাহিত্যকর্ম, জীবনাচরণ, আদর্শ ও মূল্যবোধ-সহ নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গ্রন্থে যাদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তাঁদের নাম, প্রবন্ধের নামসহ নিচে দেওয়া হলো :
১. ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম : কাব্য-স্নিগ্ধের নিপাট মুগ্ধতা।
২. রতন সিদ্দিকী : অনুভবের বোদ্ধা সংস্কৃতির কুসুম।
৩. লিয়াকত আলী : জীবনাভিজ্ঞতার নিপুণ ঋদ্ধতা।
৪. নাওমি ওয়াতানাবে : পরিশুদ্ধ বাংলায় বিশুদ্ধ জাপানি।
৫. মোহাম্মদ সরওয়ার হোসাইন আজিজ : মুগ্ধকর স্নিগ্ধতা।
৬. শাহাদাত হোসাইন শাহালাস্কুয়াস : অনুপম শিল্পী কবির সত্তরোর্ধ শিশু সত্তা।
৭. শামসুল আলম সেলিম : কবিতার তৃপ্তি সারল্যের দীপ্তি
৮. এম এল গনি : জীবনবোধে উদ্দীপ্ত প্রমুগ্ধ দার্শনিক।
৯. সালাহউদ্দিন আহাম্মদ : প্রেম দ্রোহে শব্দ সজাগ কবি।
১০. পূর্ণা রায় : ভালবাসার প্রৈতি মুগ্ধতার প্রীতি।
১১. সুভাষ সর্ব্ববিদ্যা : কাব্য-গল্পে বাস্তবতার নির্ঝর প্রসর।

মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৮

তিনে দুয়ে দশ / প্রমিতা দাস লাবণী।

তিনে দুয়ে দশ ড. মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা একটি উপন্যাস।
ভালোবাসার চেয়ে শক্তিশালী এবং কার্যকর বিষয় আর নেই।
এটি দিয়ে সব কাজ করা যায়। এটিই হচ্ছে বইটির মূল বিষয়।
পৃথিবীতে  হৃদয়ভিত্তিক বা মনোবৃত্তিক যত বিষয় আছে তন্মধ্যে
ভালোবাসাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ।
ভালোবাসার জন্য পৃথিবী, ভালোবাসার জন্য ধর্ম, রাষ্ট্র, সংসার, পরিবার
সন্তান, জীবন, চাকরি, অর্থ- এককথায় সবকিছু।
পিতামাতা সন্তানের জন্য জীবন পর্যন্ত দিতে কুণ্ঠিত হন না।
এর  মূলেও রয়েছে ভালোবাসা। সবকিছুর মুলেই রয়েছে ভালোবাসা।
তবু আমরা মাঝে মাঝে কারণে অকারণে ভালোবাসাকে ভুলে
গিয়ে এমন কাজ করে বসি, যা ভালোবাসার বিপরীত।
অথচ ভালোবাসার জন্যই এমন করা হয়। যা হিতে বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি করে।
শিশুদের পড়ানোর কিংবা দুষ্টোমি রোধের জন্য অনেক  পিতামাতা শিশুদের
শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দিয়ে থাকেন। নানাভাবে তাদের মনে যন্ত্রণা দিয়ে থাকেন।
 কেন এমন  করেন? ভালোবাসার জন্য,  ছেলেমেয়ের ভালোর জন্য। তারা যাতে ভালো হয় সেজন্য
এভাবে শিশুদের যন্ত্রণা দিয়ে থাকেন।
কিন্তু এভাবে ভালো করতে গিয়ে শিশুকে যে শারীরিক ও মানসিক  যন্ত্রণা  দেওয়া হয়
তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। এমন করলে শিশু মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পাগল হয়ে যায়।
স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে। শিশু ক্রমে ক্রমে উগ্র হয়ে ওঠে। পিতামাতার চরম অবাধ্য হয়ে যায়।
অনেকে বিপথে পা বাড়ায়। গৃহত্যাগ করে, নিজেকে  অপ্রয়োজনীয় ভেবে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে।
এমন শারীরিক ও মানসিক শাসন   শিশুদের কত ভয়ঙ্কর এবং ক্ষতিকর,
তা যদি সামান্যও পিতামাতা জানতেন তাহলে কখনো এমন শারীরিক বা মানসিক শাসন করতেন না।
অমন শাসন করার চিন্তাও করতেন না।
তাহলে শিশুকে কীভাবে লেখাপড়ায় মন বসানো যায় কিংবা কীভাবে অবাধ্য শিশুকে বাধ্য করা যায়

ড. মোহাম্মদ আমীন
কীভাবে তাদের দুষ্ট মনে সুষ্ঠতার সৃজন করা যায়?
সহজে এবং খুব সহজে ভালোবাসা দিয়ে যে কোনো অবাধ্য শিশুকে  কোনোরূপ
শারীরিক ও মানসিক শাস্তি না দিয়েও তাকে  বাধ্য করা যায়, সুবোধ করে তোলা যায়।
ভালোবাসা শুধু ভালোবাসা দিয়ে, লেখাপড়ায় সবচেয়ে অমনোযোগী শিশুটিকেও
সবচেয়ে মনযোগী শিশুতে পরিণত করা যায়।
এই ভালোবাসা কীভাবে দেওয়া যাবে?
তা জানার জন্য
ড. মোহাম্মদ আমীনের  তিনে দুয়ে দশ   
গ্রন্থটি আপনার অবশ্যই পড়া প্রয়োজন। পড়ানো প্রয়োজন আপনার শিশুকে।
শিশুকিশোরদের উপযোগী সহজ সরল ভাষায় লেখা বইটি
অতি সুললিত ভাষায় লেখা।পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারবেন না।
দাম বেশি নয়। মাত্র ১২০ টাকা।  কমিশন বাদ দিলে মাত্র ১০০ টাকা।
পাবেন : অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পুথিনিলয় এর স্টলে।
বইটির লেখক : ড. মোহাম্মদ আমীন।

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

উলুবনে মুক্তো / ড. মোহাম্মদ আমীন

উলুবনে মুক্তো

=======
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের ঘটনা। আমি তথন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। আমার লেখা সদ্যপ্রকাশিত ‘অফিস আদালতে বাংলা লেখার নিয়মগ্রন্থটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সচিবপদে সদ্য যোগদানকারী জনাব শফিকুল আযমকে দিতে যাই। এর আগে  মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন কবি, প্রাবন্ধিক, গীতিকার, গায়ক ও রবীন্দ্র গবেষক  
মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ওই বইটি দিচ্ছেন লেখক
ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম। তিনি বদলি হয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যোগদান করেছেন। তাঁর পরিবর্তে অতিরিক্ত সচিব জনাব আযম, ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসাবে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন।

অফিস কক্ষে তিনি একা। আরাম করে চেয়ারে হেলান দিয়ে সিগারেট টানছেন। সালাম দিয়ে বললাম : কেমন আছেন স্যার?
কোনো কিছু না বলে তিনি নথিতে চোখ দেন। মনটা খারাপ হয়ে যায়। 
ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম হলে গভীর স্নেহে বলতেন : বসো, বাসো।এতক্ষণ পরে এলে? কোথায় ছিলে?
বসব না দাঁড়িয়ে থাকব ভাবছিলম। মনটা রবাহূতের মতো খচ খচ করছে। চোখে বালি পড়লে এমন লাগে।কিছুক্ষণ পর জনাব শফিকুল আযম চোখ তুলে বললেন : কিছু বলবেন?
আমি বইটা তার দিয়ে এগিয়ে দিয়ে বললাম : আমার লেখা বই, গতকাল প্রকাশিত হয়েছে।
ভালো।
আমি তাকে বইটা তার দিকে হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আরও এগিয়ে যাই। আমার কাণ্ড দেখে তিনি ঈর্ষা আর ঘৃণায় মুখটাকে বিকৃত করে সিগারেটে টান দিতে দিতে বললেন : আমি বই পড়ি এটা আপনাকে কে বলেছে?

তার প্রশ্নে আমি বিমূঢ়। 
এর কোনো জবাব নেই। তিনি বই পড়েন, এটা আমাকে কেউ বলেননি। পড়েন না, এটাও বলেননি। কিন্তু বই না পড়ে কী সচিব হওয়া যায়? আরও অনেক সচিবকে বই দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও দিয়েছি, মহামান্য রাষ্ট্রপতিকেও দিয়েছি। তারা তো এমন বলেননি! মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ বই পেয়ে গভীর মনযোগের সঙ্গে আধঘণ্টা পড়ে বলেছিলেন : চমৎকার। বইটা সরকারি কর্মকর্তাদের বাংলা বানানের সীমাবদ্ধতা নিরসনে বেশ কাজ দেবে। আমি তাঁর মন্তব্য শুনে পুলকিত হয়ে উঠেছিলাম।
সাধারণত লেখকরা নতুন কোনো বই প্রকাশ হলে কয়েকজনকে উপহার দেন। আমিও দিই। অফিসের সিনিয়র বস হিসাবে সচিব সবার আগে। তাই তার জন্য একটা বই এনেছিলাম। কিন্তু জবাব শুনে লজ্জায় আমার চেয়ে হাতের বইটা আরও বেশি কাঁপছিল।
 লেখাগুলো যেন তীরের মতো পাতা হতে ছুটে যেতে চাইছে।
এবার জনাব শফিকুল আযম সাহেবের অফিস কক্ষের চারিদিকে তাকিয়ে  আমি হতবাক। মনে হয় নতুন কোনো এক অনুর্বর মরুভূমি। রুমে অনেকগুলো আলমারি ও তাক। ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম সাহেবের সময়  আলমিরাগুলো বইপত্রে
ভূঁইয়া সফিকুল  ইসলাম ও লেখক
ভর্তি ছিলএখন সেখানে শূন্যতার হাহাকার সব বইপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। একটা আলমিরার এক কোণে পাথরের কয়েকটা ক্রেস্ট। বাকি সবগুলো আলমারি শূন্য। ভূঁইয়া সাহেবের টেবিলে শোভা পেত দেশি-বিদেশি নানা বই। আলোচনা হতো কাজের ফাঁকে শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে।
টেবিলে কোনো বইপত্র নেই। সিগারেটের দুটো প্যাকেট, একটি ম্যাচ এবং কয়েকটা ফাইল।

আলমারি আর টেবিলে বইপত্রের শূন্যতা দেখে মনে হচ্ছিল, এ কক্ষে আমি আগে আর কোনোদিন আসিনি। অথচ ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম সাহেব থাকাকালীন প্রতিদিন অন্তত একবার এসেছি। আসতে হয়েছে। না-এলে ডেকে এনেছেন। আলাপ হয়েছে কবিতার, সাহিত্যের, দেশের, উন্নয়নের এবং মানুষের।
বই জ্ঞানের বাহন। বইশূন্য ঘর প্রাণহীন জীবের মতো অসাড় এবং ক্রমশ গন্ধময় হাওয়া। আমার নাকে এসে তেমন দুর্গন্ধ আঘাত করতে শুরু করে। আলমারির শূন্যতা দেখে নিজেকে বড় অসহায় লাগছিল। এখান থেকে কত বই নিয়ে পড়েছি। ইস, কেন বইটা আনলাম! 
যদিও জনাব শফিকুল আযমের মতো ব্যবহার আর কোনো সচিবের নিকট থেকে পাইনি। তবু এরপর থেকে কাউকে বই উপহার দেওয়ার আগে পঞ্চাশ বার চিন্তা করব।
আলমারির মতো জনব শফিকুল আযম সাহেবের মাথাও হয়তো শূন্য। এজন্য অফিসে ধূমপান নিষেধ সত্ত্বেও দিব্যি সিগারেট টেনে যাচ্ছিলেন। বই পড়লে জানতে পারতেন- অফিস কক্ষে ধূমপান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

বসলাম না আর।
বইটা নিয়ে চলে এলাম নিজের রুমে।
উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর চেয়ে নিজের গালে নিজে দুটো থাপ্পর খাওয়া অনেক ভালোগবেষণা, প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়ন, মাতৃভাষা জ্ঞান, প্রাত্যহিক প্রয়োজন, শুদ্ধ বানান চর্চা এবং বিসিএস-সহ যে-কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি লিংক :
শুবাচ লিংক
শুবাচ লিংক/২
শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/১
শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/২
শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৩
নাটোর জেলার নামকরণ
চকরিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য
মানিকগঞ্জ জেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য
হাতিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস ও ঐতিহ্য
পটুয়াখালী আগুনমুখা নদীর নামকরণ
ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও ইউনিয়নসমূহের নামকরণ



রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৬

ড. মোহাম্মদ আমীন, বঙ্কিমচন্দ্র ও সাহিত্য চর্চা / মো: আব্দুস সালাম খান

মোহাম্মদ আমীনের চকরিয়ার ইতিহাস  অভয়নগরের ইতিহাস গ্রন্থে যে সকল চমৎকার তথ্য লিপিবদ্ধ হয়েছে, তা পড়ে মুগ্ধ হতে হয়। পুঁটি মাছের মুখ দিয়ে “ পৃথিবীতে একমাত্র  মানুষই নিজের মলমূত্র খায়  “ বলিয়ে যেভাবে মানুষের বিবেককে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়েছে তাতে স্যানিটেশন সম্পর্কে  মানুষ  সচেতন না হয়ে পারে না।  তার গ্রন্থসমূহে অতীতকে জানার এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ রচনার জন্য মানব সমাজকে সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সাহিত্য চর্চায় তার মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে মানব কল্যাণে তিনি আরও ব্রতী হবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। তার সাধানা তাকে খ্যাতির উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করবে এটাই কামনা করি।
জনাব আমীনের লেখা  ‘বনমামলা দায়ের ও পরিচালনার কৌশল’ এবং ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ও আদেশনামা’ বইদুটো আমাদের সহকর্মীদের দৈনন্দিন কর্তব্যপালনে উপকারে আসবে। বই দুটো প্রশাসনে নিয়োজিত উদীয়মান কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি কার্যক্রমে আরও সুদক্ষ করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। জনাব মোহাম্মদ আমীন আমাদের গর্ব। আমি তার চমৎকার লেখার প্রশংসা করছি। তার এ কর্ম প্রচেষ্টা অন্যদেরকে বই লিখতে অনুপ্রাণিত করবে।
কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনাব আমীনের সাহিত্য চর্চায় আমি মুগ্ধ। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেসির পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছেন। ‘তিলোত্তমা হাতিয়া’ যিনি লিখেত পারেন তার পক্ষে বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করা অসম্ভব নয়। তার জন্য আমি গর্ববোধ করি।

লেখক : মো: আব্দুস সালাম খান, প্রাক্তন সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও  রেক্টর, বিপিএটিসি, সাভার, ঢাকা এবং প্রাক্তন জেলাপ্রশাসক, চট্টগ্রাম।